
উজ্জ্বল হোড়, জলপাইগুড়ি : শীতের রোদ গায়ে মেখে সবুজ রঙের কচি কচি পাতা যেন সদ্য আড়মোড়া ভাঙছে, উত্তরের চা বাগানের ছবি এমনই হওয়ার কথা থাকলেও বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও খরা চা বলয়ে। স্বাদে এবং গন্ধে মরসুমের যে কোনও সময়কে পিছনে ফেলে দেয় শীতঘুম ভাঙা এই সময়ের চা পাতা। চা বাগান পত্তনকারী সাহেবরা যে পাতার নাম রেখেছিলেন ‘ফার্স্ট ফ্লাশ।’ চা পর্ষদের নির্দেশে ফেব্রুয়ারি থেকে ডুয়ার্স এবং তরাইয়ে ‘ফার্স্ট ফ্লাশে’র চা পাতা তোলা যাবে । দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের কাছে রুটি রুজির অন্যতম অবলম্বন এই চা চাষ। কিন্তু এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে প্রথম ফ্লাশের চায়ের উৎপাদন। কারণ বৃষ্টির দেখা নেই. অক্টোবর মাস থেকে উত্তরবঙ্গে সেচ ব্যবস্থারের মাধ্যমে চলছে চা গাছের প্রয়োজনীয় জলের যোগান। সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় বাড়ছে রোগ, পোকার আক্রমণে চা গাছ বাঁচাতে বাড়ছে কীট নাশকের ব্যবহার যার ফলে বাড়ছে উৎপাদন খরচ।
উত্তরের চারটি জেলার অন্যতম শিল্প চা, তবে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারনে বিগত কয়েক বছর ধরে যে ধারা চলে আসছে প্রকৃতির সেটি এবারও যে বজায় থাকবে তার আভাস ইতিমধ্যেই মিলেছে বলে মন্তব্য চা বাগান মালিক গোষ্ঠীর সংগঠন ডি বি আই টি এর সচিবের মুখেও।
ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হতে চলেছে তবুও দেখা নেই বৃষ্টির, ঘন কুয়াশায় ঢেকে রয়েছে চা বাগান। একদিকে প্রকৃতির রোষ তার সঙ্গে নানান কারণে বেড়ে চলা উৎপাদন খরচ, এই দুইয়ের জাঁতাকলে কার্যত অবরুদ্ধ ডুয়ার্সের চা শিল্প । চা বলয়ের এমন আবহাওয়ার সব থেকে বড় প্রভাব পরবে চা উৎপাদনের পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ওপর বলেই মনে করছেন বিভিন্ন চা শ্রমিক সংগঠনের অভিজ্ঞ নেতৃত্ব।