
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতাঃ রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে টাকা বন্ধ নিয়ে এবার হাই কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রের সরকার। আদালত জানতে চাইল, একশো দিনের কাজ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার স্বপক্ষে তথ্য-প্রমাণ কই?
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের এজলাসে। রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে টাকা বন্ধ কেন? তা জানতে চেয়েছে আদালত। এবিষয়ে তদন্তের কোনও ব্যবস্থা আছে কিনা আদালতে উপস্থিত কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের কাছে তাও জানতে চেয়েছে আদালত। আদালতে রাজ্য জানায়, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্র টাকা মেটাচ্ছে না বলে অভিযোগ জানান হয়েছে।
পালটা কেন্দ্রের দাবি, রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে প্রচুর দুর্নীতি হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষে রাজ্য খরচের কোনও নথি না দেওয়ায় কেন্দ্র এই প্রকল্পে টাকা পাঠানো বন্ধ করেছে। কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী আদালতে আরও জানান, “রাজ্যজুড়ে প্রচুর ভুয়ো জব কার্ড পাওয়া যাওয়ার পর কেন্দ্র ফান্ড বন্ধ করেছে।”মামলাকরীদের তরফে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি, “অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের বক্তব্যের কোনও ভিত্তি নেই। যারা মামলা করেছে তাঁরা খেতমজুর। বেঁচে থাকতে তাঁরা প্রশ্ন তুলতেই পারে।”
কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের কথা শুনে, অসন্তোষ প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত জানতে চায়, “রাজ্য যে কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করেছে, তারা যে রাস্তা তৈরি করেনি, ব্রিজ তৈরি করেনি, টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছে, তার স্বপক্ষে কেন্দ্রের কাছে কোনও প্রমাণ আছে কি!” রাজ্য এই প্রকল্পের কার্যকারিতার একটা রিপোর্ট দিয়েছে। সেটা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা আছে কিনা। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “শ্রমিকদের টাকা দেওয়া যেমন রাজ্যের দায়িত্ব, কেন্দ্রের দায়িত্ব ফান্ড দেওয়া। এটা শুধু রাজ্যের দায়িত্ব নয়।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা বন্ধের বিরোধিতা করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। মামলা করেছিল ক্ষেত মজদুর সংগঠন।