
নিজস্ব সংবাদদাতা, ওঙ্কার বাংলা : কলকাতার ফুটপাথে সাত মাসের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার দোষীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। আদালতের এই নির্দেশ নজিরবিহীন। কারণ, নির্যাতিতার মৃত্যু হয়নি। যদিও আদালতের পর্যবেক্ষণ, যে ভাবে সাত মাসের একটি শিশুকন্যাকে অত্যাচার করা হয়েছে, তা বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল ঘটনার ৮০ দিনের মধ্যে দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি নির্যাতিত শিশুটির পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছে আদালত। আসামিকে পকসো আইন ছাড়াও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১৮, ১৩৭ (২), ১৪০ (১), ১৪০ (৪) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক ইন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় মিত্র।
এই নক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ নভেম্বর। সেদিন বড়তলা থানায় শিশু নিখোঁজের অভিযোগ জানিয়েছিলেন ফুটপাথবাসী এক দম্পতি। কয়েক ঘণ্টা পরে ওই ফুটপাথ থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। বড়তলার ফুটপাথের যেখানে শিশুটিকে পাওয়া যায়, সেখান থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরেই বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতো শিশুটি। ঘটনার দিন তাকে রেখে তাঁরা কাজে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে শিশুটিকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। রাস্তার একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যুবককে চিহ্নিত করেছিলেন তদন্তকারীরা। তারপর ৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। ঘটনার ২৬ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে। সোমবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। অভিযুক্তের নাম রাজীব ঘোষ, বয়স ৩৪, বাড়ি ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর এলাকায়। নিগৃহীত শিশুটি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে প্রাথমিক পরীক্ষায় যৌন নির্যাতনের প্রমাণও পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় সোমবার সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘‘অজস্র সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা দেখেছি। আরজি কর হাসপাতাল থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসেছিলেন শারীরিক পরীক্ষার জন্য। সেই চিকিৎসকও জানিয়েছেন, এটি বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা। যে ভাবে ওইটুকু শিশুর উপর অত্যাচার করা হয়েছে, তা ভাবা যায় না। আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।’’