
সুমন গঙ্গোপাধ্যায়,ওঙ্কারঃ হাতে কয়েক মাস, লোকসভার মহারনে নামতে চলেছে সব রাজনৈতিক দল। লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি চরম। আর এই নির্বাচন কে সামনে রেখে স্ট্র্যাটেজি তৈরী রাজ্যের শাসক দলেরও। প্রাথমিক ভাবে ইন্ডিয়া জোটে থাকলেও রাজ্যে কংগ্রেসের সাথে কোনও রকম আসন সমঝোতায় যাওয়ার সব রাস্তাই বন্ধ করে দিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। ইতিমধ্যে তা স্পষ্ট করেও দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা তৈরিও করেছে তৃণমূল। আর তা থেকেই স্পষ্ট বাংলায় ‘একলা চলো’ নীতিতেই চলবে ঘাসফুল। তবে এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকাতে বেশ কিছু চমক থাকতে পারে বলে কালীঘাট সূত্রে খবর। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়রছে, ২৪ এর প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ যেতে পারেন বেশ কয়েকজন সাংসদ। পাশাপাশি প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান রাজ্য মন্ত্রীসভার বেশ কয়েকজন মন্ত্রী। যদিও সবটাই এখনও আলোচনা স্তরে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানা গিয়েছে, এবার টিকিট না পেতে পারেন উত্তর কলকাতা থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, হাওড়া থেকে প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান-পূর্ব থেকে সুনীল মণ্ডল, আরামবাগ থেকে অপরূপা পোদ্দার, কৃষ্ণনগর থেকে মহুয়া মৈত্র, কাঁথি থেকে শিশির অধিকারী, কলকাতা দক্ষিণ থেকে মালা রায়, দমদম থেকে সৌগত রায়। বসিরহাট থেকে নুসরত জাহান, যাদবপুর থেকে মিমি চক্রবর্তী।
উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়’র শেষ পর্যন্ত টিকিট না পেলে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার সব থেকে বেশি সম্ভাবনা তাপস রায়ের। অন্য দিকে হাওড়া থেকে টিকিট পেতে পারেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমান পূর্ব থেকে টিকিট পাওয়ার কথা শম্পা ধারার। কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে মহুয়া মৈত্র’র নাম ই প্রাথমিক ভাবে নির্দিষ্ট ছিল, কিন্তু একদিকে সংসদের ঘটনার পাশাপাশি দলেরই একটা বড় অংশর আপত্তি থাকার কারণে সম্ভবত বদলাতে পারে প্রার্থী। সেক্ষেত্রে যে নামটি সব থেকে বেশি আলোচনাতে তিনি রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। কাঁথি থেকে স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের টিকিট পাবেন না শিশির অধিকারী, এই কেন্দ্র থেকে ২ জনের নাম উঠে আসছে তাঁরা হলেন সুপ্রকাশ গিরি ও উত্তম বারিক। একইভাবে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই বর্তমানে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও জোড়া ফুল এর টিকিট পাবেন না, তার বদলে প্রার্থী হতে পারেন প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। অপরদিকে দমদম লোকসভা থেকে বয়সের কারণে খুব সম্ভবত টিকিট পাচ্ছেন না সৌগত রায়। এই আসনে চমক হিসাবে থাকতে পারেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বসিরহাট থেকে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা এটিএম আব্দুল্লাহ’র।যাদবপুর আসনে সম্ভবত আর দাঁড়াবেন না মিমি চক্রবর্তী। এই কেন্দ্রে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা প্রাক্তন বাম সংসদ বর্তমান তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত ভট্টাচার্যর, তবে আরো একটি নাম ও শোনা যাচ্ছে, তিনি লাভলি মৈত্র। তবে অনিচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ ফেলতে পারছেন না দেব। তাই ঘাটাল থেকে আবারও প্রার্থী হবেন তিনি।
কোচবিহার থেকে এগিয়ে পার্থ প্রতিম রায়। আলিপুরদুয়ার থেকে প্রার্থী হতে পারেন লেওস কুজুর, নাম আসছে রাজেশ লাকরার। জলপাইগুড়ি থেকে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা এসটিএসি সেলের নেতা কৃষ্ণ দাস। দার্জিলিং থেকে কেশবরাজ শর্মা। রায়গঞ্জ থেকে প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান পরিবেশ মন্ত্রী মোহম্মদ গোলাম রাব্বনি।
বালুরঘাট থেকে টিকিট পেতে পারেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব মৈত্র। মালদহ উত্তর থেকে আব্দুর রহিম বক্স। মালদহ দক্ষিণ থেকে টিকিট পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর, নাম আছে বর্তমান মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনেরও। জঙ্গিপুর থেকে খলিলুর রহমান, বহরমপুর থেকে শাওনি সিংহ রায়, মুর্শিদাবাদ থেকে হুমায়ুন কবীর টিকিট পেতে পারেন। রানাঘাট থেকে নাম আসছে বর্ণালী দে রায়ের, বনগা থেকে টিকিট পেতে পারেন মমতা বালা ঠাকুর,তবে তিনি নাকি আর দাঁড়াতে চাইছেন না। সে ক্ষেত্রে প্রার্থী করা হবে ঠাকুর পরিবারের কাউকেই। ব্যারাকপুর থেকে টিকিট পাচ্ছেন অর্জুন সিং- ই । যদিও রাজ চক্রবর্তীর নামও আলোচনাতে আছে।
বারাসতের টিকিট পাচ্ছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার, জয়নগর থেকে প্রতিমা মণ্ডল, ডায়মন্ডহারবার থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, উলুবেড়িয়া থেকে সাজদা আহমেদ, তবে তিনিও নাকি দাঁড়াতে চাইছেন না। সেক্ষেত্রে উলুবেড়িয়ার তৃণমূল প্রার্থী হতে পারেন মমতা মন্ত্রী সভার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ওরফে ববি। আবার এই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পারেন সুলতান আহমেদ- সাজদা আহমেদের ছেলে চিকিৎসক তাহা আহমেদ।
শ্রীরামপুর থেকে টিকিট পাচ্ছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলি থেকে টিকিট পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রাজ্যের আর এক মন্ত্রী তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর ও পর্যটন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। ঝাড়গ্রাম থেকে টিকিট পেতে পারেন রাজ্যের বন দফতরের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী বীরবাহা হাসদা। মেদিনীপুর থেকে জুন মালিয়া। পুরুলিয়া থেকে শান্তিরাম মাহাতো। বাঁকুড়া থেকেই অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষ্ণুপুর থেকে প্রার্থী হতে পারেন এই কেন্দ্রের বর্তমান বিজেপির সাংসদ সৌমিত্র খা’র প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মন্ডল। বর্ধমান- দুর্গাপুর থেকে টিকিট পেতে পারেন সায়নী ঘোষ। অন্যদিকে আসানসোল থেকে এবারও সম্ভবত টিকিট পাচ্ছেন শত্রুঘ্ন সিনহা, বোলপুর থেকে অসিত মাল ও বীরভূম থেকে শতাব্দী রায়ই সম্ভবত প্রার্থী হচ্ছেন।