
নিজস্ব প্রতিনিধি: মধ্যযুগীয় বর্বরতা ! না তালিবানি শাসন! মালদার কালিয়াচকের এক নির্মম ঘটনায় শোরগোল রাজ্য জুড়ে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্যের উপস্থিতিতেই এলাকায় বসল তিন তিনবার সালিশি সভা। আর সেই সালিশি সভায় এক দম্পতিকে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে মারধর। সালিশি সভা শেষে গোটা রাত এই দম্পতিকে ঘরবন্দি করে রাখার অভিযোগ। সেখানেই যেন ক্যামেরাহীন এক সিনেমা চললো গোটা রাত।গত শুক্রবার সিনেমার কায়দায় তাদের সাথে আচরণ করে অভিযুক্তরা। এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। জল খেতে চাইলেও মুখের কাছে জল ফেলে দেওয়া হয় কিন্তু তাদেরকে খেতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। এরপর শনিবার সকালে আবারো ওই দম্পতিকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। সিগারেটের ছ্যাকা দিয়ে মাথার চুল কেটে ঘুঁটে ও জুতোর মালা পরিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয় বলে অভিযোগ। গত শুক্রবারের ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ কিছু না জানলেও শনিবার এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কালিয়াচক থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আক্রান্ত দম্পতিকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাদের ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। ঘটনায় আক্রান্ত ওই ব্যক্তির পক্ষ থেকে কালিয়াচক থানায় ১৯ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর মধ্যে পুলিশ শনিবারই ১১ জনকে গ্রেফতার করে। সরকারি পক্ষের আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল জানান, এই মামলার পরবর্তী সুনামি আগামী ২০ তারিখ। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে ১১ জন। তিনি আরো জানান, এই মহিলা এবং ব্যক্তি দুজনই পূর্বের বিবাহ বিচ্ছেদ করে। এরপর মুসলিম সমাজের নিয়ম অনুযায়ী কাজী নামা করে তারা এক বছর আগে বিয়ে করেছিল। ওই ব্যক্তি রাঁচিতে হকারের কাজ করে। সেই সূত্রে মাঝেমধ্যে স্ত্রীর সাথে দেখা করতে আসত সে। এরপর গত শুক্রবার ১২ তারিখ ওই মহিলার প্রাক্তন স্বামী সহ গ্রামবাসীরা তাদেরকে নিয়ে সালিশি সভা করে। সবাই এই মহিলা এবং ওই ব্যক্তির যে বিবাহ তা মান্যতা দেয়নি তারা। এরপর তাদের আটকে রাখা হয় মারধর করা হয় এবং পরের দিন গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়।
এই ঘটনায় বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের আমলে সারা রাজ্যে মানুষের কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই। বিভিন্ন জায়গায় বসছে সালিশি সভা,গণ ধোলাই এর মত ঘটনা ঘটছে। মানুষ পুলিশের উপর ভরসা করতে পারছে না।