
ওঙ্কার ডেস্ক : একমাত্র মেয়ে সালৌনি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে ২০১৯ সালে. তারপর থেকে দু চোখের পাতা এক করতে পারতেন না বাবা উদয়ন মুখোপাধ্যায়. তখন থেকেই তাঁর ইচ্ছে, মেয়ের স্মরণে এমন কিছু করবেন যা সমাজের কাজে লাগে। বহি বাধা পেরিয়ে অবশেষে নতুন বছরে তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ হল.
১৪৩১ সালের ১লা বৈশাখ পথ চলা শুরু হলো সালৌনি পারফর্মিং আর্টস-এর। শান্তিপুরের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে আবৃতি, অভিনয়, নিউজ অ্যাঙ্কারিং সহ বহু সাংস্কৃতিক বিষয় শেখানো হয়। এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলতে গিয়ে সালৌনির বাবা তথা সালৌনি পারফর্মিং আর্টস এর কর্ণধার উদয়ন মুখোপাধ্যায় জানান, সালৌনি মারা যাওয়ার পর থেকেই এইরকম কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিল তাঁর. প্রথমে সমাজের পিছিয়ে পরা ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটা স্কুল করার চিন্তা ভাবনা থাকলেও অর্থের অভাবে সেটা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু, হাল ছাড়েননি উদয়ন বাবু. মেয়ের যেহুতু নাচ-গান-আবৃতি ইত্যাদি ভালবাসত, পরবর্তীতে তাই তার স্মৃতিতে শান্তিপুরের বুকে এই রকম একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করা হলো। পাশাপাশি তিনি জানান, কলকাতার প্রতিষ্ঠিত শিল্পীরা তাঁরা ক্লাস করাতে আসবেন সালৌনি পারফর্মিং আর্টস-এ.
এই প্রতিষ্ঠান সমন্ধে শান্তিপুরের পৌরপিতা সুব্রত ঘোষ বলেন, শান্তিপুর শিল্প, সংস্কৃতির শহর। এইরকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়াতে শান্তিপুরের মুকুটে এক নতুন পালক যুক্ত হলো।
নিজের মেয়ে আর নেই. তাই মানুষের পাশে থেকে নিজের জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান উদয়ন বাবু. এই অনুষ্ঠানে শান্তিপুরের এক দরিদ্র যুবক যে সংসারের হাল ধরতে নিজের পড়াশুনো ছেড়ে দিয়ে ট্রেনে হকারি করছে, তার পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন সালৌনির বাবা। তার হাতে কিছু অর্থ সাহায্যও তুলে দেন তিনি। সব মিলিয়ে মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যে জীবনের আসল অর্থ, সেটাই আরেকবার বুঝিয়ে দিলেন উদয়ন মুখোপাধ্যায়