
ওঙ্কার ডেস্ক : পেহেলগামের নির্মম জঙ্গি হামলার তদন্ত যতই এগোচ্ছে, উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই রক্তাক্ত হত্যালীলার পিছনে রয়েছে লস্কর-ই-তোইবার শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফোর্স’ (TRF)। যদিও এই সংগঠনটি নামকাওয়াস্তে আলাদা, আদতে এটি লস্করেরই একটি অপারেশনাল বাহিনী, যারা সরাসরি নির্দেশ পায় পাকিস্তান থেকে, হাফিজ সইদের মত জঙ্গিদের হাত ধরে।
সূত্রের খবর, TRF-এর মূল কার্যালয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন জঙ্গি শিবিরে। এখানেই পাক সেনা ও ISI-এর প্রশিক্ষণে সামরিক কমান্ডোর মতো ট্রেনিং নেয় এরা। দীর্ঘদিন ধরেই লস্করের হয়ে কাজ করছে এই শাখা, বিশেষ করে গ্রাউন্ড অপারেশনে। সোনমার্গ, বুটা পাঠরি ও গান্ডেরওয়াল এলাকায় একাধিক বড়সড় হামলায় জড়িত ছিল তারা।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বুটা পাঠরিতে এক ভয়াবহ হামলায় দুই সেনা জওয়ান সহ চারজনকে হত্যা করে তারা। সেই একই মাসে সোনমার্গে এক সুড়ঙ্গে ঢুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ৬ নির্মাণ কর্মী ও এক চিকিৎসককে। সেই ঘটনার পর ডিসেম্বরে এক সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর হাতে নিকেশ হয় TRF-এর এ-প্লাস ক্যাটেগরির জঙ্গি জুনেইদ আহমেদ ভাট, যার বাড়ি ছিল কুলগাঁওয়ে। কিন্তু বাকিরা গা-ঢাকা দিয়ে জঙ্গলে মিলিয়ে যায়।
এরপর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকে লস্করের এই শাখা। পার্বত্য জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়ে পাক নেতৃত্বের নির্দেশের অপেক্ষায় বসে থাকে তারা। TRF-এর কমান্ডারদের সঙ্গে পাকিস্তানে তথাকথিত কারাবন্দি হাফিজ সইদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, এই পুরো মডিউল কার্যত হাফিজের ‘রিমোট কন্ট্রোলে’ চলে। তার ডানহাত, লস্করের ডেপুটি সইফুল্লা কাশ্মীরি জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে এবং বিভিন্ন অপারেশনের নির্দেশ দেয়।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, TRF শুধুই আদর্শগত সমর্থন পায় না লস্করের থেকে, বরং অস্ত্র, অর্থ, প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ, সব কিছুতেই মদত দেয় লস্কর ও তাদের মদতপুষ্ট পাক সেনা এবং গুপ্তচর সংস্থা ISI।
পাকিস্তান যতই আন্তর্জাতিক মহলের সামনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখোশ পরুক, পহলগামের এই ভয়াবহ হামলা আবারও প্রমাণ করল— হাফিজ সইদের মতো জঙ্গিরাই আজও সেই তান্ডবের রিমোট হাতে ধরে রেখেছে।