
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাতভর অবস্থানের পর জুনিয়র ডাক্তাররা শেষ পর্যন্ত পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সদলবলে বৈঠক করলেন। বৈঠক শেষে প্রাপ্তি আপাতত একটাই। ঝড় জলে রাজপথ থেকে অবস্থান তুলে নিলেন ডাক্তাররা।
তার আগে দুটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ কমিশনার চিকিৎসকদের দাবি মত তাদের পুরো কুড়ি বাইশ জনের ডেলিগেশনের সঙ্গে মিট করতে সম্মত হয়েছেন। দ্বিতীয়ত পুলিশ ব্যারিকেড তুলে নিয়ে লালবাজারের দিকে অনেকটা এগোতে দিয়েছে ডাক্তারদের মিছিল। জুনিয়র ডাক্তাররা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগচেয়ে তাকে একটা প্রতীকি মেরুদন্ড উপহার দিয়ে এসেছেন।
এই অবধি সবই ঠিক ছিল। এরপরে গোলবাঁধে একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলে নগর পালের সঙ্গে বৈঠক পর্বের আগে একটি সম্প্রচারিত খবরকে কেন্দ্র করে। তাতে দেখা যায়, কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে কুনাল ঘোষ কথা বলছেন।
সম্প্রচারিত খবরে দাবী করা যায় রফা সূত্র বের করার জন্যই কুনাল ঘোষে এই বৈঠক করছিলেন। কিন্তু এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পর আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যে সংগঠন জুনিয়র ডক্টর ফেডারেশন, তারা বলে দেন, এই চিকিৎসকরা কাদের তরফে কুনাল ঘোষের সঙ্গে কথা বলছেন আমরা জানি না। এরা ডক্টর ফোরামের কেউ নন।
তারপরে কুনাল ঘোষ আবশ্য ফেসবুকে একটা দীর্ঘ পোষ্ট দিয়ে ব্যাপারটার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন। এবং সেখানে প্রচ্ছন্নভাবে দাবী করেন যে তাঁর উদ্যোগেই এই জট কেটেছে। কিন্তু আন্দোলনকারী ডক্টর ফোরামের বক্তব্য কুনাল ঘোষের সঙ্গে তারা কোনও আলোচনা করেননি।
যাইহোক ওঙ্কার নিউজে র নিজস্ব সূত্রে যা খবর, সোমবার বিকেল থেকেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগী হন যাতে এই লালবাজার সংকটের অবসান ঘটে। পরিস্থিতি সামলাতে তিনি মাঠে নামান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন নকশাল পন্থী ছাত্র নেতাকে, যিনি বর্তমানে তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক।
প্রাক্তন নকশালপন্থী এই তৃণমূল নেতা বর্তমানে একটি সরকারি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান। তিনি তার পুরনো যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন যাতে একটা সম্মানজনক রফাসূত্র বের করা যায়। তিনি নিজে সরাসরি ময়দানে না নেমে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করছেন এরকম একাধিক সিনিয়র চিকিৎসককে যোগাযোগ করেন। পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারিভাবে কমিউনিকেট করতে থাকেন কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে। মঙ্গলবার সকালের দিকে প্রথমে এক দফা আলোচনায় বসানোর চেষ্টা-ভেস্তে যায়।
মূলত ব্যারিকেড পিছোনো এবং ডেলিগেশনে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। ততক্ষণে পুলিশ কমিশনার ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে নীতিগতভাবে রাজি হয়ে গিয়েছেন।
শেষ পর্যন্ত অভিষেকের টিমের চেষ্টা সফল হয়। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা বাইশ জন প্রতিনিধি নিয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত প্রতিটি ডেভেলপমেন্ট অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মনিটর করছিলেন বলে জানা গিয়েছে।