
সূর্যজ্যোতি পাল, কোচবিহার: জমির মালিক কে না জানিয়েই জোর করে জমি থেকে বালি চুরির দৌরাত্ম চলছে কোচবিহারে। বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভুগীরা। বরং বাধা দিলেই তাঁদের উপর চড়াও হচ্ছে বালি মাফিয়ারা।
এমনই একটি ঘটনায় রুখে দাঁড়ানোয় জমির মালিক ও তার স্ত্রী পুত্র নিগৃহীত হলেন বালি মাফিয়া ও তার সাগরেদদের দ্বারা। গোটা ঘটনা বিস্তারিত জানিয়ে দিনহাটা থানায় সেই বালি মাফিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন জমির মালিক। ঘটনাটি ঘটেছে দিনহাটায় এক নং ব্লকের সীমান্ত গ্রাম গিতালদহ ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের পরমানন্দ গ্রামে।
রমেশ চন্দ্র সেন নামের ওই জমির মালিকের অভিযোগ, ১৩ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় বালি মাফিয়া, মোবাইল কোর্ট ওরফে রফিকুল ইসলাম ট্রাক্টরের ট্রলি দিয়ে জোর করে তার জমি থেকে প্রায় কুড়ি ট্রলি বালি তুলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জমির মালিক পৌঁছে তার জমি থেকে বালি তোলা বন্ধ করতে গেলে রোষে পড়েন। সেদিন সেদিন সন্ধ্যায় সেই বালিমাভিয়া তার সাঙ্গবাঙ্গদের সঙ্গে নিয়ে ভরা বাজারে সেই জমির মালিক এবং তার পরিবারকে আক্রমণ করে। অভিযোগ, আক্রমণের জেরে জমির মালিকের দোকানের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাঁর স্ত্রী পুত্র সহ তাঁকে বেধড়ক মারধর করে মোবাইল কোর্ট নামের ওই বালি মাফিয়া। আক্রমণের জেরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় অভিযোগকারী রমেশ চন্দ্র সেন এর পুত্র।
শুধু এই জমির মালিকই নয়, গোটা এলাকার বাসিন্দারাই ওই বালি মাফিয়ার নামে অভিযোগ জানিয়েছেন, রফিকুল ইসলাম জোর করে ট্রলি দিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে বালি তুলে আসছে। এলাকার লোকেরা বাধা দিলে নানান রকম হুমকি দেওয়া হয়। এই বিষয়ে পরমানন্দ গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য মুক্তা বর্মন রায় বলেন, যেভাবে বালি তোলা হচ্ছে তাতে অচিরেই নদীর করাল গ্রাসে পড়বে গ্রামটি। পাশাপাশি তিনি প্রশাসনকে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেন। অপরদিকে মুক্তা বর্মনের স্বামী তথা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিজিৎ রায় বলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই অবৈধ উপায়ে বালি তুলে আসছে এমনকি নদীর প্লাবন আটকানোর জন্য সরকারিভাবে যে কাঁচা বাঁধ দেওয়া হয়েছে সেই বাঁধের গোড়া থেকেও সে অবৈধ উপায়ে বালি তুলে নিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, বাধা দিতে গিয়ে তার আক্রমণের মুখে পড়েছেন রমেশচন্দ্র সেন ও তার পরিবার।
প্রসঙ্গত দিনহাটা ১ নং ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় শীতকালের শুষ্ক মরশুমে চলছে দেদারসে অবৈধ বালি উত্তোলনের কাজ। বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠছে এর সঙ্গে হয়তো কোন গোপন যোগ সাজেষ রয়েছে প্রশাসন এবং ভূমি সংস্কার দপ্তরের।