
নিজস্ব সংবাদদাতা , উত্তর ২৪ পরগনা: গোবরডাঙ্গায় তৃণমূলের কর্মীসভা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক উত্তাপ। কর্মীসভার মঞ্চ থেকেই রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে সরাসরি আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, “এটা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব লেগেই আছে খাওয়া-পাওয়া-চাওয়াকে কেন্দ্র করে। একজনের পর আরেকজন হোল্ড করলে এমন একটা হিট হয়, যেটা বন্দুকের গুলির থেকেও বেশি অনুভবযোগ্য।”
তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনা নিছক কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আগামী দিনে এর আরও প্রতিফলন দেখা যাবে। এটাই বহিঃপ্রকাশ।”
সূত্রের খবর, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদ থেকে সরানোর পরিকল্পনায় গোপনে বৈঠক করেছেন এলাকার পাঁচজন তৃণমূল বিধায়ক। এই বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের প্রতিক্রিয়া, “এটা কারও ব্যক্তিগত ভাবনা-চিন্তা, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। কে কোথায়, কবে বৈঠক করছে, সে সম্পর্কে আমার কাছে কোনও তথ্য নেই। আমি একজন মন্ত্রী ও সাংসদ হিসেবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারি না। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী জেলা সভাপতির পদ বদল হতে থাকে। কেউ চিরকাল ওই পদে থাকে না।”
এদিকে সোমবার রাতে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে বাইকে বসাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ধারালো অস্ত্রের হামলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, “একটি ধর্মীয় স্থান, যেখানে একজন মন্ত্রী ও সাংসদ থাকেন, সেই জায়গায় এমন ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও ভয়ঙ্কর। পুলিশের সম্পূর্ণ গাফিলতির ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে।”
গাইঘাটা থানার ওসি এবং জেলার পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শান্তনু বলেন,
“একাধিকবার বলার পরেও এখানে একজন সিভিক ভলান্টিয়ারও মোতায়েন করা হয়নি। পুলিশ সম্পূর্ণভাবে নেগলিজেন্স মোডে চলছে। এই এলাকায় বেআইনি কাজের সঙ্গে পুলিশেরই যোগ রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে পর্যন্ত চুরির মামলা দেয় এই পুলিশ। এতটাই অশিক্ষিত যে মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও চুরির মামলা করে। যদি ডাকাতির কেস দিতো, তবেই হয়তো শান্তি পেত!”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার কথা জানিয়ে শান্তনু ঠাকুর বলেন, “শুধু জানাব না, এদের (ওসি ও এসপি) বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে তুলোধোনা করব।”
বহুদিন ধরেই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা ঘিরে শাসকদলের অন্দরেই দ্বন্দ্বের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। তার সঙ্গে ঠাকুরবাড়ি ঘিরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ক্ষোভ— রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ আরও চড়াবে বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।