
গোপাল শীল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষাঙ্গনের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়. কোথাও দেখা যায় শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে স্কুল, কোথাও আবার শিক্ষক থাকলেও পড়ুয়ার সংখ্যা খুবই কম. এবার সম্পূর্ন বিপরীত ছবি ধরা পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায়। প্রাথমিক শিক্ষকদের আপ্রাণ চেষ্টায় পুনরুজ্জীবন লাভ করলো বন্ধ হয়ে যাওয়া দেবী চক জুনিয়র হাই স্কুল। দেবীচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিষ বেড়া জানান, তাঁরা উদ্যোগ নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ুয়াদের জোগাড় করেন. বর্তমানে দেবীচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে 56 জন এবং দেবীচক জুনিয়র হাই স্কুলে 34 জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে. এই বিশাল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে দুটি স্কুলে ৬ জন ক্যাজুয়াল শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন যাদের পারিশ্রমিকের দায়িত্ব নেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থায়ী শিক্ষকরা। তিনি আরও জানান, স্কুলের যে বেহাল দশা ছিল তা সংস্কার করা হয়েছে. পাশাপাশি পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে.
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে বেশ কিছু জুনিয়র হাইস্কুল তৈরির কথা ঘোষণা করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। যেখানে পড়তে পারবে পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। সেই মতো ২০১৩ সালে পাথর প্রতিমা ব্লকের রামগঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতে দেবী চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঢিল ছোড়া দূরত্বে গড়ে ওঠে দেবীর চক জুনিয়র হাই স্কুল। তবে শিক্ষকের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীও স্কুল ছাড়তে থাকে। তখনই ত্রাতার ভূমিকায় দেখা যায় প্রতিবেশী দেবী চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। এমনই এক শিক্ষিকা অনিমা সাহু যিনি এগিয়ে আসেন এই পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ গড়তে.
দেবীচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লক্ষ্মীকান্ত দাস জানান, এলাকার বেশকিছু যুবক-যুবতী অল্প পারিশ্রমিকে পড়ুয়াদের পড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেন. পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, যোগা, আঁকা ইত্যাদির শেখার ব্যবস্থাও রয়েছে.
এই বিষয় পঞ্চায়েত সদস্য আশিষ কুমার মান্না বলেন, বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গতানুগতিক শিক্ষাদান পদ্ধতি থেকে একটু সরে এসে শিক্ষাঙ্গণে উদ্ভাবন আনার চেষ্টা করছেন এই শিক্ষকেরা.
শিক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য যখন তোলপাড়, তখন শিক্ষকদের এমন সদর্থক ভূমিকা সত্যি যেন আশার আলো দেখায়. তাঁদের এই অভূতপূর্ব কর্মকান্ডে খুশি এলাকাবাসীরা।