
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা : বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ‘এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের বৈধ চাকরিহারা সমাজ’-এর পক্ষ থেকে অনশন শুরু করলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। আপাতত চার জন শিক্ষক এই লাগাতার অনশনে বসেছেন বলে জানা গিয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল বাতিল হয় ,চাকরি হারায় প্রায় ২৬০০০ শিক্ষক। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য হয়েও চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বহু শিক্ষক। জেলায় জেলায় তাঁরা সামিল হচ্ছেন ডিআই অফিস ওভিযানে। কসবায় শিক্ষকদের আন্দোলন আটকাতে চলেছে পুলিশি প্রতিরোধ, লাথি, লাঠি চার্জ ।
গত বুধবার থেকেই এসএসসি দফতরের সামনে অবস্থানে করছেন আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। তাঁদের মূল দাবি, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ অথচ চাকরি না পাওয়া প্রার্থীদের নামের তালিকা এবং ওএমআর শিটের ‘মিরর ইমেজ’ অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে এসেসসিকে। পাশাপাশি, বুধবার কসবার জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) দফতরের সামনে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অনশনের সিদ্ধান্ত নেয়ছেন তারা ।
প্রসঙ্গত, বুধবার চাকরিহারাদের একাংশ এসএসসি দফতরে যান প্রাক্তন বিচারপতি ও বর্তমান সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। সেখানে এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসি কর্তৃপক্ষকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশের সময়সীমা বেঁধে দেন। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
এদিকে, কলকাতার পাশাপাশি বুধবার বিভিন্ন জেলাতেও ডিআই অফিস অভিযান চালান চাকরিহারা প্রার্থীরা। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কলকাতার কসবার ডিআই অফিসের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় লাঠিচার্জ ও লাথি মারে।
এ নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, “পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার পরই হালকা বলপ্রয়োগ করে। তবে লাথি মারা একেবারেই অনুচিত।” রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ঘটনার প্রেক্ষিতে জানান, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে পুলিশ নিশ্চুপ থাকতে পারে না। পাশাপাশি তিনি শিক্ষকদের শান্ত থাকার আবেদনও জানান।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ থেকে রানি রাসমণি পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি শুক্রবার এসএসসি দফতর অভিযান চালানোর কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে।
চাকরি থেকে বঞ্চিত হাজার হাজার প্রার্থী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনে সামিল হলেও সরকার পক্ষ এখনও পর্যন্ত কোনও সুস্পষ্ট আশ্বাস দেয়নি বলে অভিযোগ। এবারের লাগাতার অনশন এবং ধারাবাহিক আন্দোলন কতটা চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তা এখন দেখার বিষয়।