
নিজস্ব সংবাদদাতা, কুলতলী : লোকালয়ে বাঘের আতঙ্ক আর জালে ঘেরা গোটা গ্রাম। তারপর রাত পোহাতেই সে ধরা পড়ল খাঁচায়। একদিনের বন্দিত্বের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সুন্দরবনের চামতা জঙ্গলে ফিরল সেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ব্লকের দেউলবাড়ি এলাকায়। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় চাষিরা জমিতে দেখতে পান বাঘের পায়ের ছাপ। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। জানলা-দরজা বন্ধ করে গৃহবন্দি হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। খবর যায় বন দফতরে।
খবর পেয়েই তৎপর হন কুলতলি রেঞ্জের বনকর্মীরা। দ্রুত পৌঁছে এলাকাকে জালের ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়। শুরু হয় পায়ের ছাপ অনুসরণ করে বাঘের গতিবিধির সন্ধান। বসানো হয় ছাগলের টোপসহ একাধিক খাঁচা।
গভীর রাতে এক খাঁচায় বন্দি হয় বাঘটি। বনদপ্তরের কর্মীরা তৎক্ষণাৎ বাঘটিকে নিয়ে যান ঝড়খালি রেসকিউ সেন্টারে। সেখানে পশুচিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চলে শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা।
শুক্রবার সকালে বনদপ্তরের লঞ্চে করে বাঘটিকে নিয়ে যাওয়া হয় চামতা জঙ্গলে। আর সেখানেই ঘটে নাটকীয় মুহূর্ত। খাঁচার গেট খুলতেই এক লাফে নদীতে ঝাঁপ দেয় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি। মুহূর্তে সাঁতরে ঢুকে পড়ে ঘন জঙ্গলের অন্দরে।
ঘটনার বিষয়ে জেলা মুখ্য বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী জানান, “আমরা গতকাল সকালে খবর পাই দেউলবাড়ি এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে। সঙ্গে সঙ্গে বনকর্মীরা পৌঁছে যায় এবং সুরক্ষার জন্য পুরো এলাকা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। গভীর রাতে বাঘটি ধরা পড়ে। শারীরিক পরীক্ষার পর তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে জঙ্গলে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সুন্দরবনের লাগোয়া কুলতলি ব্লকে প্রায়শই বাঘ ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। খাবারের সন্ধানেই নদী পেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে তারা। তবে বনদপ্তরের তৎপরতায় বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেল গোটা গ্রাম
এই ঘটনার পর আরও একবার সামনে এল বন ও লোকালয়ের সীমান্তে মানুষের সহাবস্থানের জটিলতা। তবে আপাতত স্বস্তিতে দেউলবাড়ি। আর সুন্দরবন ফিরে পেয়েছে তার ‘রাজাকে’।