
গোপাল শীল,সুন্দরবন: সুন্দরবনের একেবারে প্রান্তিক এলাকা নগেন্দ্রপুর। । এই নগেন্দ্রপুরে বংশ পরম্পরায় বহু বছর ধরে বসবাস করে আসছে প্রায় ৫০ টি আদিবাসী পরিবার। কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এদের জীবনযাপন করতে হয় । দীর্ঘদিন ধরেই এখানকার বাসিন্দারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।এই এলাকার বাসিন্দারা পাননা লক্ষীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা। শিক্ষার আলো এখনো পৌঁছায়নি এই সকল পরিবারের শিশুদের কাছে। রোজগারের তাগিদে বাড়ির পুরুষেরা চলে যান ভিন রাজ্যে। আবার কোন কোন পুরুষ বহুদিন ধরে থাকেন গভীর সমুদ্রে। তাই নিজেদের পেট চালাতে কঠিন লড়াই করতে হয় এই এলাকার আদিবাসী মহিলাদের। এখানকার আদিবাসী মহিলারা সকাল থেকে বেরিয়ে পড়েন সমুদ্র পাড়ে কিংবা জঙ্গলে। নদী থেকে জাল ফেলে মাছ ধরা, জঙ্গল থেকে কাকড়া ধরা, জ্বালানি সংগ্রহ করা , এই সব কিছুই তাদের প্রতিদিনের প্রধান কাজ। মহিলারা নিজেরাই সমুদ্র থেকে মাছ এবং কাকড়া ধরে এবং জঙ্গল থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে বাড়িতে গিয়ে রান্না করেন। তবে সারাদিনের এত লড়াইয়ের পরও তারা ভোলেননি তাদের সংস্কৃতি। বিস্তীর্ণ রায়দিঘী এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সরকারি অনুষ্ঠানে এখানকার আদিবাসী মহিলা এবং পুরুষেরা তাদের ধর্মীয় নাচ এবং গান প্রদর্শন করে থাকেন।
তবে অন্যান্য শিল্পীদের মতন এখানকার আদিবাসী শিল্পীরা পাননি যথাযোগ্য সম্মান ও সরকারি অনুদান। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে চলেছে জীবন সংগ্রাম,পাশাপাশি নিজস্ব সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা।