
অমিত কুমার দাস, কলকাতা : দু’বছর বছর পরেও ক্ষতিপূরণ পাননি বাঘের হানায় মৃতের পরিবার। অবশেষে মুশকিল আসান কলকাতা হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে দুই পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য।
আদালত জানিয়েছে, যে কোনও অঞ্চলে বাঘের হানায় মৃত্যু হলে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। সেক্ষেত্রে বাঘের হামলায় মৃত ব্যক্তি গভীর জঙ্গলে ঢুকেছিলেন, নাকি বাঘ বিচরণ ক্ষেত্রের আশেপাশে ছিলেন, সেরকম কোনও বিষয় বাদ বিচার করা হবে না। অর্থাৎ, সুন্দরবনের যে কোনও জায়গায় বাঘের হানায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ পাবেন পরিবার।
মামলাকারির আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত ও শ্রীময়ী মুখোপাধ্যায় জানান, ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর সুন্দরবনের নদীতে মাছ ও কাঁকড়া ধরার জন্য বনদপ্তরের বৈধ অনুমতিপত্র (বিএলসি) নিয়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় মৃত্যু হয় কুলতলির কাটামারি এলাকার বাসিন্দা দিলীপ সর্দারের।
এদিকে, অমল দণ্ডপাটও অনুমতি নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন সুন্দরবনের নদীতে। ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাঁদের নৌকাতে বাঘ হামলা চালায়। অন্যরা পালিয়ে গেলেও অমল বাঘের হানায় গুরুতর আহত হন। তারপরে পয়লা জানুয়ারি ২০২২ তিনি মারা যান।
অভিযোগ, এনিয়ে হাই কোর্টের একাধিক নির্দেশ সত্বেও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছিল না ওই দুই পরিবার। বাধ্য হয়েই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতদের স্ত্রী শেফালী সর্দার ও মইপিটের বাঘ বিধবা তপতী দণ্ডপাট।
যদিও আদালতে তাঁদের আবেদনের বিরোধিতা জানান রাজ্যের কৌঁসুলি। দাবি, তাঁরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে নিষিদ্ধ ‘কোর’ এলাকায় ঢুকেছিল। কাজেই তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত নয়।
তার প্রেক্ষিতে আবেদনকারীরা জানায়, এনিয়ে আদালতের নির্দেশ আছে যে কোর এলাকা বা সাধারণ এলাকা যেখানেই বাঘের আক্রমণে কেউ মারা যাবে তারই সরকারি ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য হবে। কাজেই তিনি ‘কোর’ এলাকায় ঢুকে ছিলেন কিনা, তা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য এটা দেখার কোন ব্যাপার নেই। এদিন মৃতদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এবং অন্য সমস্ত নথি আদালতে পেশ করা হয়।