
শুভম কর্মকার, বাঁকুড়া : ‘আসছে বছর আইস্য টুসু, দিব পাটের শাড়ি গো..’ এই গান গেয়েই মকর সংক্রান্তির সকালে ‘ঘরের মেয়ে’ টুসুকে বিদায় জানালেন বাঁকুড়া তথা রাঢ় বঙ্গের মানুষ। দীর্ঘ এক মাস প্রতি সন্ধ্যায় গানের মাধ্যমে টুসু আরাধনায় মেতেছিলেন তাঁরা. মকর সংক্রান্তির আগের রাতে ‘জাগরণ’ শেষে এবার তাঁর বিদায়ের পালা। সোমবার সকালে বাঁকুড়ার হরিয়ালগাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, ফুল আর মালায় সাজানো টুসুর চৌদল নিয়ে গান করতে করতে বিসর্জনের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছেন মহিলারা। সকলের একটাই প্রার্থণা, আবার এসো ‘মা’। বৃদ্ধা বকুল বাগদী বলেন, টুসুকে বিদায় জানানোর সময় এসেছে, মনটা খুবই খারাপ। হাজারো কষ্টকে মনে চেপে রেখে মা-কে বিসর্জন দিয়ে এলাম।
ভারতী বাউরী বলেন, মা সংক্রান্তিতে এসেছিলেন। তাঁকে মেয়ের মতো রেখেছিলাম। এখন মায়ের বিদায়ের পালা। মাকে জমুনার ঘাটে ভাসিয়ে এলাম। খুব কষ্ট হচ্ছে।
লোকসংস্কৃতি গবেষক রবিলোচন ঘোষ বলেন, আজকের দিনটা সত্যিই কষ্টের। এক মাস ধরে টুসুকে নিজের মেয়ের মতো পালন করেছি. নিজের মেয়েকে বিদায় দিতে যে কষ্ট হয়, এখনও ঠিক সেইরকম কষ্ট হচ্ছে. বিদায়ের মুহূর্তে সকলের চোখেই জল। মকর সংক্রান্তির দিন সকাল থেকে টুসু বিদায়ের বেদনা ভরা সুর বাঁকুড়ার আনাচে কানাচে।