
সঞ্জয় রায় চৌধুরী : শহরের বুকে ফের বিপর্যয়। কলকাতার বুকে বউবাজারে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ১০ নম্বরের শ্রীনাধ দাস লেনে একটি পুরনো বাড়ি একাংশ। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাড়িটিকে আগেই বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল। মালিকপক্ষ সংস্কারের কাজ শুরু করেছিল। সেই কাজ চলাকালীনই আচমকাই সামনের দিকের বারান্দার একটা বড় অংশ ভেঙে পড়ে। ভেতরে তখন নির্মাণের কাজে ব্যস্ত ছিলেন একাধিক শ্রমিক। আচমকা এমন বিপর্যয়ে হতভম্ব হয়ে যান সকলেই। আটকে যান কয়েক শ্রমিক। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্মীরা, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ, দমকল বাহিনী ও বউবাজার থানার পুলিশ। শুরু হয় উদ্ধারকাজ। স্থানীয়রাও উদ্ধার কাজে সহায়তা করেন। এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশ বিপজ্জনক কি না, তা খতিয়ে দেখছেন ইঞ্জিনিয়াররা।
সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৫ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের অবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে। ভবনের অবস্থা বিবেচনায় উদ্ধারকাজে আরও সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বহু পুরনো এই বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কী কারণে ভেঙে পড়লো বাড়িটি ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় একদিকে যেমন উদ্বেগে শ্রমিকদের পরিবার, তেমনই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রাও।
আর আগেও উত্তর কলকাতার মুক্তিরামবাবু স্ট্রিটে বাড়ি ভেঙে পরে। সূত্রের খবরে জানা যায়, পুরনো বাড়িটি সংস্কারের কাজ চলছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। এ দিন আচমকাই সেটির সামনের অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ঘটনায় আহত হয়েছিল শ্রমিক। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে ধ্বংসস্তপের ভিতর কেউ আটকে নেই বলেই জানানো হয়েছিল কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে।
বাড়ি ভেঙে যাওয়া কিংবা হেলে পড়া নতুন কোন বিষয় নয়, বহুবার বাড়ি ভেঙে পড়েছে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায়। কখনও পুরনো বাড়ি ভেঙে গেছে আবার কখনও নির্মীয়মাণ বাড়ি হেলে পড়েছে। সেরকমই গত বছর কালীঘাটে ভেঙে পরে বাড়ির একাংশ। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের মণ্ডল পাড়া লেনে ভেঙে পরে পুরনো বাড়ির একাংশ। সেই বাড়ির দোতলার অংশে কেউ থাকতেন না। কিন্তু, নীচের অংশে অনেকেই থাকতেন। আচমকাই রাতে দোতলার একটা অংশ ভেঙে পড়ে। বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ার আওয়াজ শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে নীচের অংশের ভাড়াটেদের বের করে নেন। তারপর দোতলার বিস্তীর্ণ অংশ ভেঙে পড়ে বাড়িটির। এরপর স্থানীয় থানা এবং দমকলকর্মীদের খবর দেওয়া হয়।