
নিজস্ব সংবাদদাতা , দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা : বঙ্গোপসাগরে তৈরি নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে সুন্দরবনে। এর ফলে একাধিক নদী বাঁধ বিপজ্জনকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের বেগুয়াখালি ও মহিষামারি এলাকায় প্রায় ১০০ মিটার নদী বাঁধে ধ্বস নামায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। কোথাও কোথাও নদীর জল বাঁধ উপচে গ্রামে ঢুকে পড়েছে।
ধ্বসের খবর পেয়ে সাতসকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গঙ্গাসাগর কোস্টাল থানার পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। এদিকে, রিং বাঁধ তৈরির প্রস্তুতির আগেই মহিষামারিতে প্রায় ৬০০ মিটার বাঁধ ভেঙে পড়ে, জলে তলিয়ে যায় প্রায় ৫০টি পরিবার।
অন্যদিকে, মৌসুনী দ্বীপের বালিয়ারার ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধের সংস্কার কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে আসেন মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার। সঙ্গে ছিলেন সেচ দপ্তরের এসডিও, বিডিও, নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় প্রধানরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের গোবর্ধনপুরেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। নদী বাঁধ ভেঙে প্রায় ৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে রাস্তায় ঠাঁই নিয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ষা শুরু হলেই নদী বাঁধ মেরামতির কাজের নামে শুরু হয় দুর্নীতি। গ্রীষ্মকালে যখন কাজ করা সম্ভব, তখন কোনও সংস্থা এলাকায় আসে না।
বাসিন্দাদের দাবি, বর্ষাকালে দ্রুত ও নিম্নমানের কাজ করে পুরো অর্থ খরচ দেখানো হয়। ফলে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাঁধ ভেঙে পড়ছে। কয়েকদিন আগেই বিধায়ক সমীর কুমার জানা রিং বাঁধ তৈরির আশ্বাস দিলেও, তার আগেই পুরো বাঁধ ভেঙে যায়।
গত দু’দিন ধরে টানা ভাঙনের ফলে গ্রামে জল ঢুকে পড়েছে। পশুপাখি, মানুষ—সবাই এখন একমাত্র রাস্তার উপরেই আশ্রিত। বহু ঘরের ভিতরে জল ঢুকে পড়েছে, জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন বাসিন্দারা। চোখে জল নিয়ে তাঁরা বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনও জনপ্রতিনিধি বা সরকারি আধিকারিক তাঁদের খোঁজ নিতে আসেননি।