
নিজস্ব সংবাদদাতা : অডিও-কাণ্ডে দিশেহারা পরিস্থিতি কী ভাবে সামলাবেন তা কি বুঝে উঠতে পারছেন না অনুব্রত ? রাজনীতিক থেকে সাধারণ মানুষ সবার লক্ষ্য এখন সেই দিকে। কারণ, তৃণমূলের দুর্ভেধ্য জেলায় এত বড় ইস্যু নিশ্চয়ই ছেড়ে দেবে না বিরোধীরা, বিশেষ করে বিজেপি। এরমধ্যে জটিলতা দেখা দিয়েছে জেলা তৃণমূলের ভিতরেই। অডিওটি যে তাঁর সেটা স্বয়ং কেষ্ট মেনে নিলেও, রবিবার তাতে AI তত্ত্ব জুড়ে দিলেন তাঁরই ‘ছায়াসঙ্গী। বোলপুর থানায় গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বললেন, অডিওটা AI দিয়ে তৈরি। এবং এটা বিজেপির চক্রান্ত’। এই কারসাজির গন্ধ হঠাৎ কি করে পেলেন ওই কেষ্ট ঘনিষ্ট তৃণমূল নেতা তা অবশ্য খোলসা করে জানালেন না।
বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে সোশ্যাল মাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। তাতে শোনা যায় বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করছেন বীরভূম জেলার প্রাক্তন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শুধু সেই পুলিশ অফিসার নয়, ফোনে গালমন্দ করার সময়ে তাঁর স্ত্রী ও মা সম্পর্কে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন অনুব্রত মণ্ডল। পরে নবান্নের নির্দেশে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। সেই অডিও ভাইরাল হতেই রাজ্য-রাজনীতিতে হইচই শুরু হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে তাঁকে এই ঘটনায় ৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল। অনুব্রত অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষমা চেয়ে নেন। প্রশ্ন এখানেই! অনুব্রত মণ্ডলের ছায়াসঙ্গী এআই তত্ত্ব খাড়া করায় শুরু হয়েছে জল্পনা, যদি অডিওটি কারসাজি করেই করা হয়ে থাকে তাহলে তৃণমূল নেতা সহজেই ক্ষমাই চাইলেন কেন!
একজন আইসিকে গালমন্দ করার ‘অপরাধে’ পুলিশের তরফ থেকেও তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই শনিবার থানায় তলব করা হয়েছিল অনুব্রতকে। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে অনুব্রত যাননি। সময় চেয়ে নেন। পুলিশও ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে বলে ১১টার মধ্যে দেখা করতে হবে তাঁকে। তৃণমূল সূত্রে খবর সকাল সাড়ে ১০টার পরে জানা যায়, তৃণমূল নেতা আজ যেতে পারেন থানায়। তবে বেলা দুটো নাগাদ। কেষ্টর এক অনুগামী জানান, দাদার শরীর খুব একটা ভাল নেই। তবে দুপুরের দিকে তিনি হাজিরা দিতে পারেন।
রোববার যদি অনুব্রত মণ্ডল হাজিরা না দেন তাহলে পুলিশ ঠিক কি কঠোর পদক্ষেপ করবে? এ ব্যাপারে পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, আরও একবার নোটিস দেওয়া হবে। তার মধ্যে হাজিরা না দিলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। তবে তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ট মহল সূত্রের খবর, পুলিশের তলবে অনুব্রত নাও সাড়া দিতে পারেন। পরিবর্তে সোমবার জেলা আদালত বা কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানাতে পারেন।