
নিজস্ব সংবাদদাতা , নদীয়া : ডিউটি চলাকালীন নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকেই মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা । মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার দশমাইল এলাকা। শনিবার রাত ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ নাকা চেকিংয়ের সময় আচমকা নিজের রিভলভার তুলে নিজেকেই গুলি করেন কর্তব্যরত কনস্টেবল বিভাষ ঘোষ।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে তড়িঘড়ি স্থানান্তর করা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। রাতেই বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছে যান বনগাঁ জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিভাষ ঘোষ (২৮) এসএপি ২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানার বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা বিভাষ তিন বছর আগে যোগ দেন রাজ্য পুলিশের চাকরিতে। মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে হয়েছে মৌসুমী ঘোষের সঙ্গে। স্ত্রীর গর্ভে বেড়ে উঠছে তাঁদের প্রথম সন্তান।
শনিবার সকালে জামাইষষ্ঠীর ছুটিতে তিনি গিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে। বিকেলে ডিউটির জন্য ফিরে আসেন গোপালনগরে। তারপর রাতেই ঘটে যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছিলেন বিভাষ। ওষুধ খাচ্ছিলেন নিয়মিত। তবে আত্মহত্যার চেষ্টার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কোনও পারিবারিক চাপ, মানসিক অবসাদ, না কি পেশাগত কোনও কারণে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত— তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ প্রশাসনের একাংশের দাবি, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, শারীরিক ও মানসিক চাপে ছিলেন বিভাষ। তবে এই ঘটনায় বড়সড় গাফিলতি বা বাহিনীর কোনও অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে কি না, তা নিয়ে এখনও কিছু জানাতে নারাজ কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে সহকর্মীদের মধ্যে। সদাহাস্য, কর্মঠ বলেই পরিচিত ছিলেন বিভাষ ঘোষ। তাঁর এই আকস্মিক পদক্ষেপে স্তম্ভিত পুলিশ মহল ও পরিবার। এখন সব নজর এসএসকেএম-এর চিকিৎসকদের ওপর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তরুণ কনস্টেবল।