
নিজস্ব সংবাদদাতা , শিলিগুড়ি : টানা বৃষ্টির জেরে ধস নেমেছে উত্তর সিকিমের একাধিক এলাকায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে লাচেন ও লাচুংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল। আটকে পড়েছেন প্রায় ১,৬০০ পর্যটক। তিন সেনা জওয়ানের মৃত্যুর পাশাপাশি নিখোঁজ আরও ছ’জন। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝে অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপে শুরু হল বিশেষ উদ্ধার অভিযান।
সোমবার, লাচুংয়ে আটকে থাকা প্রায় ১,৫০০ পর্যটককে ২৮৪টি গাড়ি এবং ১৬টি বাইকের সাহায্যে ফিডাং হয়ে সরিয়ে আনা হয়। কিন্তু রবিবার রাতের নতুন ধসে ফের বন্ধ হয়ে যায় পথ। ফলে আটকে পড়া পর্যটকদের আর উদ্ধার করা যাচ্ছিল না।
এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়— এয়ারলিফট করে উদ্ধার করতে হবে পর্যটকদের। সেইমতো মঙ্গলবার সকালেই পাকইয়ং বিমানবন্দর থেকে V-5 হেলিকপ্টারে রওনা দেয় ২৯ জনের বিশেষ এনডিআরএফ (জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী) দল।
ধ্বসপ্রবণ এলাকায় প্রথমে নামানো হয় তাঁদের। সেখানেই সেনা ছাউনির কাছে ধসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন তিন জওয়ান। নিখোঁজ ছয় সেনার খোঁজে তল্লাশি শুরু করে এই দলটি। এনডিআরএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেনাদের উদ্ধারের পাশাপাশি ওই এলাকায় আটকে থাকা পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হচ্ছে, যাতে তাদের পরবর্তী পর্যায়ে হেলিকপ্টারে উদ্ধার করা যায়।
উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে রয়েছে স্যাটেলাইট ফোন, বিশেষ কমিউনিকেশন ডিভাইস, এবং বিপর্যয় মোকাবিলার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি।
উত্তর সিকিম প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আবহাওয়া এবং ধস পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধাপে ধাপে পর্যটকদের এয়ারলিফট করে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে এখনও কিছু এলাকায় পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।
প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, “জমি পথ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। কয়েকটি এলাকায় রাস্তাই নেই। হেলিকপ্টারই একমাত্র ভরসা। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। উদ্ধার কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পর্যটকদের পরিবার— সকলের মুখেই উৎকণ্ঠা। তবে সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সম্মিলিত চেষ্টায় আশা, শীঘ্রই ফিরবেন সকলেই।