
স্পোর্টস ডেস্ক : তাঁর পক্ষেই সম্ভব। ৪০ বছরেও ১৭ বছরের তরুণ সেনসেশন ইয়ামালকে পিছনে ফেলে অসম্ভবের সেই দৌড়। চোট আর ব্যথা তাঁকে আটকাতে পারেনি। ম্যাচ শেষে জয়ের আনন্দে কেঁদেছেন। বলেছেন, ‘জাতীয় দলের জন্য হলে আমি পা ভেঙে গেলেও খেলতাম। এটা ছিল ট্রফির লড়াই, আমি সব কিছু উজাড় করে দিয়েছি।’ সুবর্ণ সুযোগ, জেতাতে হবে-এই মন্ত্রই যেন সব ভুলিয়ে রেখেছিল রোনাল্ডোকে। তিনদিন আগে তিনি জার্মানির বিরুদ্ধে ২৫ বছরে প্রথম জয়ে পর্তুগালকে সাহায্য করেছিলেন, সেমিফাইনালে ২-১ গোলে জয়ের গোলটা করেছিলেন রোনাল্ডো।
করলেন ফাইনালেও। যে গোলই মূলত সমতায় ফেরায়, বাঁচিয়ে দেয় পর্তুগালকে। নিয়ে যায় টাইব্রেকারে। ৪০ বছর বয়সে ৯ ম্যাচে ৮ গোল। কোয়ার্টার-ফাইনাল, সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে গোল, পর্তুগালকে নেশনস লিগ জিতিয়ে চোখের জল আসাটাই স্বাভাবিক চিরতরুণ রোনাল্ডোর। সবাই যখন উৎসবে মাতোয়ারা তখন মাঠে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন তিনি। রোনাল্ডোর কান্না সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেশ কয়েকবারই দেখা গেছে। ২০২২ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ে। সৌদি আরবে কিংস কাপ ফাইনাল হেরে। ইউরোয় স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হয়ে। আলোচনা-সমালোচনা, ট্রোল, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, কী হয়নি সেসব কান্না নিয়ে! এভারের কান্না কেবলই প্রাপ্তির, শুধুই তৃপ্তির। চোখের জল আর মুখের হাসি মিলেমিশে একাকার। এ যে একটা ট্রফি, বহু কাঙ্ক্ষিত একটা ট্রফির ছোঁয়ার সুখের কান্না। এরজন্যই তো এত লড়াই। হয়তো এটাই শেষ আন্তর্জাতিক ফাইনাল পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলারের।
নিজেই বলেছেন, ‘চিরকাল খেলা তো আর সম্ভব নয়।’ পর্তুগালের জার্সিতে নেশনস লিগ জয়কে কতটা বড় করে দেখছেন, তা বোঝাতে গিয়ে রোনাল্ডো বলেন, ‘পর্তুগালের হয়ে জেতাটা সব সময়ই বিশেষ কিছু। আমার ক্লাবের হয়ে অনেক ট্রফি আছে। কিন্তু পর্তুগালের হয়ে জয় পাওয়ার চেয়ে বড় কিছুই নেই। এই যে চোখে জল আসা, কর্তব্য পালন করা…এসবেই অনেক আনন্দ।’ ৪০ বছর বয়সী রোনাল্ডো ২৩ বছরের ক্লাব ফুটবল কেরিয়ারে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩২টি ট্রফি জিতেছেন। আর পর্তুগালের হয়ে জিতলেন এবারসহ তৃতীয়বার। জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথমবার ট্রফির স্বাদ পেয়েছিলেন ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে। এরপর ২০১৯ ও ২০২৫ এ নেশনস ট্রফি। সমাজ মাধ্যমে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ট্রফি হাতে সেলিব্রেশনের ছবি পোস্ট করে রোনাল্ডো ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘এটা আমাদের।’