
স্পোর্টস ডেস্ক :সোমবার বিকেলে আচমকাই মোহনবাগানের সভাপতিত্ব থেকে ইস্তফা দেন স্বপন সাধন বসু, ওরফে টুটু বসু। শনিবার দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানিয়ে দিলেন, নৈতিকতার কারণে পদত্যাগ করেছেন। মোহনবাগানের নির্বাচনে বড় ছেলে সৃঞ্জয় বসুকে সমর্থন করার জন্যই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ, নির্বাচনে অলআউট ঝাঁপানোর বার্তা নিলেন। নিজে সরাসরি প্রার্থী হবেন না। কিন্তু সৃঞ্জয় বসুর হয়ে প্রচারে নামবেন। আগের দিন পরিবার তন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলে বসু পরিবারকে খোঁচা মারেন দেবাশিস দত্ত। এবার মোহনবাগানের সচিবকে পাল্টা বাগানের প্রাক্তন সভাপতির। টুটু বসু বলেন, ‘আমি নৈতিকতার কারণে ইস্তফা দিয়েছি। নির্বাচনে সৃঞ্জয়ের পাশে থাকব। নৈতিকভাবে সভাপতি এইসবে জড়াতে পারে না। মিত্র, বোস পরিবার নিয়ে অনেক কথা বলা হচ্ছে। তুমি বোস পরিবারের আঙুল ধরে মাঠে এসেছো। আমি ওকে প্রথম মোহনবাগানে নিয়ে যাই। তারপর অঞ্জনের সঙ্গে পরিচয় হয়। অঞ্জনের মৃত্যুর পর মিত্র পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এবার বসু পরিবারকে ধ্বংস করতে চাইছে। কিন্তু খুব তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে। আমি বটবৃক্ষ। মরে যাওয়ার পর করা উচিত ছিল। তাড়াতাড়ি করে ফেলেছে। ওর অত্যধিক লোভ। তার সঙ্গে আমি পেরে উঠেনি। আমি ভাবতে পারিনি এরকম করবে। লোভ বেড়ে গেলে কিছু করার নেই। ভাবতাম মানুষ চিনি। কিন্তু আমি মানুষ চিনতে ভুল করেছি।’
কয়েকদিন আগে বরানগরে নির্বাচনের প্রচারে দেবাশিস দত্তের সঙ্গে যোগ দেন টুটু বসুর ছোট ছেলে সৌমিক বসু, ওরফে টুবলাই। দুই ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক অশান্তির জের ময়দান পর্যন্ত পৌঁছে যায়। নির্বাচনের আবহে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।যদিও পুরো অনুষ্ঠানে তিনি থাকেননি। একটি ফোন আসায় বেরিয়ে যান। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে জোর গলায় টুটু বসু দাবি করলেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। একই গোষ্ঠীর হয়ে লড়বে দু’জন। পাশাপাশি বাগানের প্রাক্তন সভাপতি হুঙ্কার, টাইগার অভি জিন্দা হ্যায়। টুটু বসু বলেন, ‘আমি যতদিন বেঁচে আছি, কেউ আমার সংসারে ফাটল ধরাতে পারবে না। যদি সেটা হয়, আমাকে বিষ মিশিয়ে দিও। এটা আমার মান সম্মানের প্রশ্ন। টুটু বসু মান সম্মান বিসর্জন দেবে না। আমি জিতে দেখিয়ে দেব। টাইগার অভি জিন্দা হ্যায়।’
সচিব দেবাশিস দত্তের আমলে ফুটবলে সাফল্য এসেছে। মোহনবাগান আইএসএল লিগ শিল্ড জিতেছে, আইএসএল কাপ জিতেছে। এককথায়, সফল সচিব। কিন্তু টুটু বসুর দাবি, এই সাফল্য সঞ্জীব গোয়েঙ্কার। তিনিই ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে কলকাতার শিল্পপতিকে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত করেন। অর্থাৎ, ফুটবলে সমস্ত সাফল্য সঞ্জীব গোয়েঙ্কার। এই প্রসঙ্গে টুটু বসু বলেন, ‘সঞ্জীব গোয়েঙ্কার জন্য ফুটবলে সাফল্য এসেছে। তাঁকে মোহনবাগানে কে নিয়ে এসেছে? আমি একসময় ১২ কোটি পর্যন্ত দিয়েছি। কিন্তু বুঝেছিলাম, ক্লাব চালাতে গেলে ৭০-৭৫ কোটি দরকার। আরপি গোয়েঙ্কার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ছিল। সেই সূত্রে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সঙ্গে আলাপ। জানতাম ও ফুটবল ভালবাসে। তাই ওর কোম্পানির সঙ্গে মোহনবাগানের গাঁটছড়া বাঁধি। ফলে এর কৃতিত্ব কার পাওয়া উচিত জানি না।’