
নিজস্ব সংবাদদাতা, দিঘা : রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোঘাটন অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ। এই আথিতীয়তা ঘিরে বুধবার দিঘার জগন্নাথধামে দেখা গেল বঙ্গ রাজনীতির এক বিরল দৃশ্য। জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। পাশে ছিলেন স্ত্রী রিঙ্কুকও।
তবে দিলীপ ঘোষ যখন মন্দিরে পৌঁছুলেন সে সময় পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর সেখানে ছিলেন না। পরে মন্দির চত্তরের অতিথিশালায় দেখা হল বঙ্গ রাজনীতির দুই মেরুর নেতৃত্বের। খোশ মেজাজে দেখা গেল তৃণমূলনেত্রী ও বিজেপির ডাকাবুকো নেতা দিলীপ ঘোষকে। দুজনের মধ্যে চলল আলাপচারিতা। দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য শুধু দিলীপ ঘোষকে নয়, আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ রাজ্যের বিজেপি সাংসদদেরও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু দিলীপ বাদে বিজেপির কেউ এই আমন্ত্রণ রক্ষা করেননি।
এদিকে দিলীপের এই দিঘা যাওয়া নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে ইতিমধ্যে শোরগোল শুরু হয়েছে। কথা উঠছে, দিলীপ ঘোষ যদি শুধু মন্দির দর্শনে যেতেন তাহলে হয়তো আলোচনার মতো তেমন কিছু থাকতো না, কিন্তু তিনি স্ত্রীকে নিয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যেয়র আতিথ্য নিয়েছেন, বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তাও হয়েছে, এতেই দানা বাঁধছে জল্পনার রসদ। এই জল্পনাকে আরও উসকে দিয়েছে মমতার আমন্ত্রণ বয়কট করে একই দিনে কাঁথিতে সনাতনী সভার আয়োজন করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথির পথে দিলীপ গেলেও শুভেন্দুর অনুষ্ঠানে না গিয়ে তিনি পাশ কাটিয়ে চলে যান দিঘায়, মমতার অনুষ্ঠানে। সেখানে জগন্নাথ মন্দির ঘুরে দেখেন, মমতার সঙ্গে দেখা করেন, কথাবার্তাও চলে দুজনের মধ্যে।
এই বিষয়টিকে সহজ ভাবে নিতে চাইছে না রাজনৈতিক মহল। যদিও দিলীপের কথায়, ”অক্ষয় তৃতীয়ার শুভ দিনে অনেক জায়গা থেকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। সেই সব জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কোনও সভায় আমাকে ডাকা হয়নি। দিঘার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাই গেছি।” তিনি আরও বলেন, “মন্দির দর্শন আমি ভালবাসি। এখানে পার্টি বাধা হতে পারে না।” তিনি বলেন, ‘‘অক্ষয়তৃতীয়ার দিনে হিন্দু জাগরণের অনেক কর্মসূচি থাকে। মন্দির প্রতিষ্ঠাও তো হিন্দু জাগরণেরই কাজ।’’ তার পরেই স্বভাবসিদ্ধ রসবোধে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘ভগবান আমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য সাড়ে তিনশো কিলোমিটার চলে এসেছেন। আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য দুশো কিলোমিটার যেতে পারব না!’’