
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা : ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল ঘিরে উত্তপ্ত শহরের দুই প্রান্ত—গড়িয়াহাট ও দমদম। রবিবার গভীর রাতে গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে এক কেবল ব্যবসায়ীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আহত যুবক রকি রাজবংশী বর্তমানে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার সময় রাত প্রায় দু’টো। অভিযোগ, কাঁকুলিয়া রোডের বাসিন্দা নয়ন সমাদ্দার ওরফে ভোলা, রোহিত প্রসাদ ওরফে পিঙ্কু এবং সোনু হালদার ওরফে জিশু—এই তিন যুবক রকিকে তাঁর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর বাঁ হাতে একাধিক কোপ মারেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অভিযুক্ত তিন যুবকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ, তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর কাঁকুলিয়া রোড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক পোস্টার পড়েছে। যদিও তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘দুই গোষ্ঠী মত্ত অবস্থায় নিজেদের মধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার সঙ্গে আমি বা আমাদের দলের কোনও যোগ নেই।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, আহত রকি রাজবংশী ওয়ার্ড সভাপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। যদিও অজয়বাবু জানিয়েছেন, “এই সংঘর্ষের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই, এটি দু’টি গোষ্ঠীর ব্যক্তিগত বিবাদ।”
প্রসঙ্গত, রবিবার রাতের ঘটনার সূত্রপাত নভেম্বর মাসে জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেবার বিসর্জনের সময় বোমাবাজি নিয়ে রকি ও অভিযুক্তদের মধ্যে উত্তপ্ত বচসা হয়। তারপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। এদিকে, সোমবার সন্ধ্যাবেলা উত্তর কলকাতার দমদমে ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে, খোদ মেয়রের উপস্থিতিতেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। ঘটনায় তিনজনের মাথা ফাটে বলে জানা যায়।
দু’দিনের মধ্যে পরপর দুটি গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বেগ ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। পুলিশ সূত্রে খবর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ টিম গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের এই বিশেষ করা টিম।