
ওঙ্কার ডেস্ক:কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি দমন অভিযানে শহিদ নদিয়ার সেনাকর্মী, স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো ঝণ্টু আলি শেখ। শোকবিহ্বল পরিবার, কিন্তু স্বামীর আত্মবলিদানে গর্বিত স্ত্রী শাহনাজ পারভিন। চিৎকার করে বললেন, “ধর্ম এক হলেও ওদের সঙ্গে আমাদের কোনও মিল নেই। ওদের মনে বিদ্বেষ। ওরা মুসলিম নয়।”
বৃহস্পতিবার সকালে মেসেজে স্বামীর সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল শাহনাজের। স্বামী বলেছিলেন চিন্তা না করতে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খবর আসে, গুলিবিদ্ধ ঝণ্টু শহিদ হয়েছেন। চোখের জলে ভেসে যাওয়া শাহনাজ বললেন, “আমি শাস্তি চাই। আমার ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। ওই দেশটা থাকলে আরও কত বাবাকে হারাবে ছোট ছোট শিশু! ওদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানালেন তিনি। বললেন, “আমার স্বামীও বলত, ধর্ম এক হলেও ওদের সঙ্গে আমাদের কোনও মিল নেই। ওরা শুধু ধর্মের নামে খুন করে। আমার স্বামী দেশ বাঁচাতে জীবন দিল। আমি ওর জন্য গর্বিত।”
ঝণ্টুর দেহ শুক্রবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয়। সেখান থেকে ব্যারাকপুর সেনাছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর রাতে সম্পন্ন হয় গার্ড অফ অনার। তারপর শনিবার নদিয়ার তেহট্টে নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয় তাঁর কফিনবন্দি দেহ।
ঝণ্টু আলি শেখ একসময় আগ্রায় কর্মরত ছিলেন। দেড় বছর আগে কাশ্মীরে পোস্টিং হয় তাঁর। ৬ প্যারা স্পেশাল ফোর্সের হাবিলদার ছিলেন তিনি। পহেলগাঁওয়ে নাশকতার পরে ভারতীয় সেনা জঙ্গি দমনে অভিযান চালায়। সেই অভিযানে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ দেন ঝণ্টু। সেনা সূত্রে খবর, উধমপুরে সেনা-জঙ্গি এনকাউন্টারে কাঁধে গুলি লাগে তাঁর।
পহেলগাঁওয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই তীব্র চাঞ্চল্য। স্থানীয় সূত্রের দাবি, পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়াতে হামলা চালানো হয়। সেই হামলাকারীদের খোঁজে অভিযান চালাতে গিয়েই শহিদ হলেন নদিয়ার সন্তান। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শোকের ছায়া নেমে এলেও শহিদ ঝণ্টুর আত্মবলিদানকে সম্মান জানাতে প্রস্তুত তেহট্টবাসী।